আপনি কি জানেন হাট্টিমাটিম ছড়াটা মোটেও চার লাইনের কোনো ছড়া না,৫২ লাইনের একটি ছড়া
হাট্টিমাটিম ছড়াটা জানেনা এমন কোনো বাঙালি নেই।মোটামুটি মুখে কথা ফুটলেই বাঙালি শিশুদের যে কয়টি ছড়া শিখানো হয় তার মধ্যে এটি একাটি,
হাট্টিমাটিম টিম,
তারা মাঠে পাড়ে ডিম,
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টিমাটিম টিম।
আপনি কি জানেন ছড়াটা মোটেও চার লাইনের কোনো ছড়া না,৫২ লাইনের একটি ছড়া।এই চার লাইনের বেশি শতকরা ৮০ শতাংশ বাঙালি জানে কি না সন্দেহ রয়েছে।রোকনুজ্জামান খানের লেখা এটি ৫২ লাইনের সম্পুর্ণ একাট ছড়া।
রোকনুজ্জামান খান ১৯২৫ সালের ৯ এপ্রিল ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহন করেন।তিনি “দাদাভাই” নামেও পরিচিত ছিল।সেদেশের সংবাদপত্রের শিশু-কিশোরদের বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন বহু বছর।
তার রচনাগুলোর বেশির ভাগই ছিল শিশু-কিশোরদের জন্য।হাট্টিমাটিম ১৯৬২ সালের রচিত একটি ছড়া।
সেই ৫২ লাইনের ছড়াটি ঠিক এইরকম-
টাট্টুকে আজ আনতে দিলাম
বাজার থেকে শিম
মনের ভুলে আনল কিনে
মস্ত একটা ডিম।
বলল এটা ফ্রি পেয়েছে
নেয়নি কোনো দাম
ফুটলে বাঘের ছা বেরোবে
করবে ঘরের কাম।
সন্ধ্যা সকাল যখন দেখো
দিচ্ছে ডিমে তা
ডিম ফুটে আজ বের হয়েছে
লম্বা দুটো পা।
উল্টে দিয়ে পানির কলস
উল্টে দিয়ে হাড়ি
আজব দু’পা বেড়ায় ঘুরে
গায়ের যত বাড়ি।
সপ্তা বাদে ডিমের থেকে
বের হলো দুই হাত
কুপি জ্বালায় দিনের শেষে
যখন নামে রাত।
উঠোন ঝাড়ে বাসন মাজে
করে ঘরের কাম
দেখলে সবাই রেগে মরে
বলে এবার থাম।
চোখ না থাকায় এ দুর্গতি
ডিমের কি দোষ ভাই
উঠোন ঝেড়ে ময়লা ধুলায়
ঘর করে বোঝাই।
বাসন মেঝে সামলে রাখে
ময়লা ফেলার ভাড়ে
কান্ড দেখে টাট্টু বাড়ি
নিজের মাথায় মারে।
শিঙের দেখা মিলল ডিমে
মাস খানিকের মাঝে
কেমনতর ডিম তা নিয়ে
বসলো বিচার সাঝে।
গায়ের মোড়ল পান চিবিয়ে
বলল বিচার শেষ
এই গায়ে ডিম আর রবে না
তবেই হবে বেশ।
মনের দুখে ঘর ছেড়ে ডিম
চলল একা হেটে
গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে
ডিম গেলো হায় ফেটে।
গায়ের মানুষ একসাথে সব
সবাই ভয়ে হিম
ডিম ফেটে যা বের হলো তা
হাট্টিমাটিম টিম।
হাট্টিমাটিম টিম,
তারা মাঠে পাড়ে ডিম,
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টিমাটিম টিম।
এটিই ছিল রোকনুজ্জামান খানের লেখা সেই ৫২ লাইনের ছড়া।
What's Your Reaction?