আলসিন্দুরা প্রজাপতি
আলসিন্দুরা প্রজাপতি। লিখেছেনঃ সমীর সাহা-বন্যপ্রানী গবেষক, আইইউসিএন বাংলাদেশ। তথ্য সংকলনঃ প্রকিৃতিবার্তা ম্যাগাজিন

সুন্দরবন সৌন্দর্যের আধার। সুন্দরবন দেখে মানুষের মনে সুন্দর অনুভূতি ডানা মেলে | মনের আকাশে জমানো মেঘ থাকলে তা কেটে যায় পলকে। এ বনে আছে সুন্দরী, গেওয়া, বাইনসহ বিভিন্ন প্রজাতির কলেবরেও। সবুজে সবুজে সাজে | ফুলে ফুলে সাজে | মৌমাছি গানে গানে সুর তোলে | নদীর ঢেউয়ে ঢেউয়ে ছন্দ দোলে। শীতে ঠেকিয়ে আলসেমিতে ঝিমায় |
শ্বাসমূলের ফাঁকে সাপ ওত পেতে থাকে শিকার ধরা জন্য । ইতিউতি করে ভোঁদোর মুহূর্তে আড়াল হয়ে যায় গাছগাছালির পেছনে | সুন্দরবনের সৌন্দর্য আর কড়ি কাইট্টার (কাছিম) খোঁজে ২০১৫ সালের মার্চে গিয়েছিলাম সুন্দরবনে | শুরুটা ছিল পশ্চিম থেকে পূর্ব দিক | কটকা পয়েন্টে পৌছাতেই দেখলাম কয়েকটা বন্যশুকর আচ নে সামনে এগোতেই চোখ চলে গেল ছোট গাছে বসে থাকা দুটো প্রজাপতির দিকে | ক্যামেরাটা বের করে ক্লিক... ক্লিক... করে কয়েকটা ছবি তুললাম।
এরপর আশপাশের আরো কিছু ছবি তুলে জেটিতে ফিরে এলাম। তোলা ছবিগুলো দেখতে দেখতে আলসিন্দুরা প্রজাপতিতে এসে থেমে গেলাম | এদের ইংরেজি নাম Crimson Rose. বৈজ্ঞানিক নাম Pachliopta hector এবং Papilionidae গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। আইইউসিএন বাংলাদেশ -এর লাল তালিকার বইয়ে প্রজাপতিটিকে বিপন্ন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আলসিন্দুরা সুন্দরবন ছাড়াও বাংলাদেশের ইনানী, সীতাকুণ্ড, নিজামপুরসহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা মা মূলত এরা রঙিন লেজের লাল দেহের প্রজাপতি | লাল-সাদা ফৌটাযুক্ত পাখার দৈর্ঘ্য ৯০ থেকে ১১০ মিমি । এরা অবিচলভাবে সোজা লাইনে উড়তে থাকে। সাধারণত এদের উঁচুতে উড়তে দেখা গেলেও খাবার সংগ্রহের জন্য নিচু গাছেও বসে। এরা বনের ঝোপঝাড়ে বাস করলেও দিনের বেলায় খোলা জায়গায় ঘুরে বেড়ায় | উদ্ভিদবৈচিত্র্য রক্ষায় প্রজাপতির গুরুতৃ অপরিসীম | এরা পরাগায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । এছাড়া স্থলজ বাস্ততন্ত্রে তৃতীয় শ্রেণীর খাদক হিসেবে এদের গুরুত্ব রয়েছে। এরা জৈব নির্দেশক হিসেবে কাজ করে এবং এদের উপস্থিতি দেখে বনের স্বাস্থ্য নিরূপণ করা যায় ৷
What's Your Reaction?






