বাংলাদেশের বদলে যাওয়া শীত
ভোরবেলা কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকা চারপাশ, বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের মিষ্টি আলোতে ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশিরগুলো মুক্তোর মতো ঝলমল করে। শিশির ভেজা সরিষা গাছে রোদের আলো ঝিকিমিকি করে। এ যেন এক অপরুপ দৃশ্য। Winter in Bangladesh
বদলে যাওয়া শীত
ষড়ঋতুর বাংলাদেশে, প্রতিবছরই তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে ফিরে আসে শীত। পৌষ এবং মাঘ মাস শীত কাল হলেও অগ্রহায়ণ মাস থেকেই প্রকৃতির পরিবর্তনের মাধ্যমে শীতের সূচনা হতে থাকে। শুষ্ক ও রুক্ষ রূপ নিয়ে শীতের আগমন ঘটে। অধিকাংশ গাছপালার পাতা ঝরে যাওয়ায়, সবুজ প্রকৃতি শীতের দাপটে নিষ্প্রাণ হয়ে যায়। তবুও হিমেল হাওয়ায় হাঁড় কাঁপানো শীতকালীন আবহাওয়া ও প্রকৃতি অনেকেরই খুব পছন্দ।
ভোরবেলা কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকা চারপাশ, বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের মিষ্টি আলোতে ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশিরগুলো মুক্তোর মতো ঝলমল করে। শিশির ভেজা সরিষা গাছে রোদের আলো ঝিকিমিকি করে। এ যেন এক অপরুপ দৃশ্য।
শীতকালে রঙ-বেরঙের ফুল প্রকৃতিতে প্রাণের ছোঁয়া দিয়ে যায়। খেঁজুরের রস, নানা ধরণের পিঠাসহ সু-স্বাদু খাবারের ধুম পরে যায়। তাছাড়া নানা রকমের শাকসবজিতে বাংলার ক্ষেত খামার ভরে যায়। পুষ্টিবিদদের মতে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ অস্থিক্ষয় রোধে ও শরীরে রক্ত বা প্লাটিলেট গঠনে শীতকালীন শাকসবজির ভূমিকা অপরিসীম।
বছরে ছয়টি ঋতুর আবর্তন বিশ্বের খুব কম দেশেই দেখা যায়। কিন্তু আমাদের প্রকৃতির এই আশীর্বাদ দিনদিন বদলে যাচ্ছে। শীতকালে এখন দেশের উত্তরাঞ্চল ছাড়া অন্য অঞ্চলগুলোতে দিনের বেলা উষ্ণতা অনুভূত হয়। রাজধানীসহ অন্যান্য বড় শহরগুলোতে শৈত্যপ্রবাহ ছাড়া শীত তেমন একটা অনুভূত হয় না। সময় পরিবর্তন হয়ে শীতের আগমন ঘটছে দেরিতে। দীর্ঘদিনের পরিবেশদূষণ জলবায়ুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। ফলে ক্রমেই তাপমাত্রা তীব্রতর হচ্ছে যা সরাসরি উদ্ভিদ ও প্রানীর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শীতকালে দিনের বেলা তাপমাত্রা বেশি থাকছে, আবার শৈত্যপ্রবাহ তাপমাত্রা মারাত্মকভাবে কমিয়ে দিচ্ছে। এ দেশে আবহাওয়ার ওঠানামার ফলে দেখা দিচ্ছে নানা সমস্যা। শুধু তা ই নয়, শৈত্যপ্রবাহের ফলে আমের মুকুল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি নারিকেলের ফল্ধারণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব গোটা প্রতিবেশব্যবস্থাকে করে তুলছে বসবাসের অনুপযোগী। কোনো বিশেষ অঞ্চল নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের মুখে পড়েছে সারাবিশ্ব। এই পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা করতে বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের পাশাপাশি প্রয়োজন জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। সম্মিলিত উদ্যোগে সম্ভব আমাদের অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
What's Your Reaction?