যশোরের মণিরামপুর উপজেলার দেলুয়াবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন রায়কে জুতাপেটা করেছেন উক্ত বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। ১১ ডিসেম্বর (রোববার) দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষেই এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা জানাজানি হলে অভিভাবকসহ এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। খবর পেয়ে মনিরামপুর থানা পুলিশ গিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষিকা দাবি করে বলেন, “রবিবার বিদ্যালয়ে পৌঁছে হাজিরা খাতা না পাওয়ায় তিনি সরাসরি পরীক্ষার হলে চলে যান। পরীক্ষা শেষে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে গেলে অফিস কক্ষে কেউ না থাকার সুযোগে প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন রায় ওই সহকারী শিক্ষিকার গায়ের ওড়না ধরে টান দেন। এতে তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে পড়েন। এ সময় রাগে-ক্ষোভে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করেছি।
এ সময় তিনি আরও জানান, “প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন রায় তাকে অনেকদিন ধরেই কুপ্রস্তাবসহ অনৈতিক দাবি করে আসছিলেন। কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় তাকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছিলেন প্রধান শিক্ষক। বিষয়টি তিনি কমিটিকে জানানো সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এরপর প্রধান শিক্ষকের হাত থেকে রক্ষা পেতে গত ১৪ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালকসহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। তারপরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।“
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দেলুয়াবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জনের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত উক্ত সহকারি শিক্ষিকার বিবাদ চলে আসছে। রবিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ওই শিক্ষকা বিদ্যালয়ে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে যান অফিস কক্ষে। কিন্তু খাতা না পেয়ে তিনি পরীক্ষার কক্ষে যান। পরীক্ষা শেষে দুপুর একটার দিকে তিনি প্রধান শিক্ষকের কক্ষে যান হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের জন্য। কিন্তু ওই শিক্ষিকার অভিযোগ এ সময় প্রধান শিক্ষক তাকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে বাধা দেন। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে তার কথাকাটাকাটি হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ভোজগাতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিছুর রহমান তজু জানান, বিষয়টি নিয়ে দু-এক দিনের মধ্যে ম্যানেজিং কমিটির জরুরী সভা ডেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন রায়ের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, এ ব্যাপারে এখন অবধি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সারকার জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে আজ সোমবার সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।