সোনাহাট রেলসেতুতে ওভারলোড ও অবৈধ টোল রোধে ভূরুঙ্গামারীতে অভিযান

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে সোনাহাট রেলসেতুতে ওভারলোড নিয়ন্ত্রণ, নির্মাণাধীন সড়ক সেতুর দ্রুত বাস্তবায়ন এবং অবৈধ টোল আদায় রোধে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে।

সোনাহাট রেলসেতুতে ওভারলোড ও অবৈধ টোল রোধে ভূরুঙ্গামারীতে অভিযান
সোনাহাট রেলসেতুতে ওভারলোড ও অবৈধ টোল রোধে ভূরুঙ্গামারীতে অভিযান

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে সোনাহাট রেলসেতুতে অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল নিয়ন্ত্রণ, নির্মাণাধীন সড়ক সেতুর দ্রুত বাস্তবায়ন এবং অবৈধ টোল আদায় বন্ধে উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গত ১২ আগস্টের এই অভিযানে স্থানীয় পুলিশও অংশ নেয়।

ভূরুঙ্গামারী-সোনাহাট সড়কে দুধকুমার নদীর ওপর অবস্থিত পুরাতন রেলসেতু দিয়ে ৫০০ সিএফটির বেশি পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও বহুদিন ধরে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ট্রাক মালিক সমিতির সদস্যরা প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন করে আসছেন। অভিযোগ অনুসারে, প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫০০ থেকে ১,০০০ টাকা নিয়ে এই ওভারলোড পরিবহন পরিচালিত হয়।

এছাড়া সেতু পারাপারের জন্য প্রতিটি পণ্যবাহী ট্রাক থেকে ৩০-৫০ টাকা করে রশিদবিহীন টোল আদায়ের প্রমাণ মিলেছে, যা প্রায় এক দশক ধরে চলছে। সেতুর টোল সংগ্রহকারীরা স্বীকার করেছেন, দৈনিক গড়ে ১০০টি ট্রাক চলাচল করে, ফলে মাসে প্রায় ৯০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা এবং বছরে ১০ লাখের বেশি অর্থ আদায় হয়। তারা দাবি করেন, এই অর্থ চারজন ভাগ করে নেন, যদিও স্থানীয়দের মতে এর অংশ অন্যত্রও পৌঁছায়।

অতিরিক্ত ওজন বহনের ফলে পুরাতন সেতুর পাটাতন বারবার ভেঙে পড়ছে, এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সাধারণ মানুষ, রোগী, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে আমদানি-রপ্তানির জন্যও এই সেতু একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যম। সেতুর দুরবস্থার কারণে সরকারি রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বিকল্প হিসেবে দুধকুমার নদীর ওপর একটি সড়ক সেতুর নির্মাণকাজ চললেও ধীরগতির কারণে তা শেষ হতে সময় লাগছে। স্থানীয়দের প্রতিবাদ ও দাবির পরও কার্যকর সমাধান পাওয়া যায়নি।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপ জন মিত্র বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর পাটাতন ভাঙা এবং মেরামতের ধীরগতি নিয়ে জনভোগান্তি চলছে। নির্মাণাধীন সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করতে এবং অন্যান্য সমস্যার সমাধানে নির্বাহী প্রকৌশলী, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী, ট্রাক মালিক সমিতি ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা হবে।

১২ আগস্ট বিকেলের অভিযানে ট্রাকের কাগজপত্র যাচাই ও পণ্যের ওজন পরীক্ষা করা হয়। একাধিক ট্রাককে ওভারলোড অবস্থায় পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন সেনাবাহিনীর একটি টিম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপ জন মিত্র, ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি আল হেলাল মাহমুদের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী। প্রশাসন জানিয়েছে, এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0