চট্টগ্রাম বন্দরে ব্রাজিল থেকে আসা স্ক্র্যাপের কনটেইনারে তেজস্ক্রিয় উপাদান শনাক্ত
চট্টগ্রাম বন্দরে ব্রাজিল থেকে আসা স্ক্র্যাপবোঝাই একটি কনটেইনারে তেজস্ক্রিয় উপাদান শনাক্ত হয়েছে। বন্দরের রেডিয়েশন ডিটেকশন সিস্টেম অ্যালার্ম বাজানোর পর কনটেইনারটি খালাস বন্ধ করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
 
                                    চট্টগ্রাম বন্দরে ব্রাজিল থেকে চারটি বন্দর ঘুরে আসা একটি কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যা দেশে আমদানিকৃত পণ্য নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বন্দরের অত্যাধুনিক মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ রেডিয়েশন ডিটেকশন সিস্টেম কনটেইনারটি খালাসের সময় রেডিয়েশন সংকেত শনাক্ত করে।
৩ আগস্ট কনটেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। এরপর ৬ আগস্ট দুপুরে ৪ নম্বর ফটক দিয়ে বন্দরের বাইরে নেওয়ার সময় হঠাৎ রেডিয়েশন অ্যালার্ম বাজে। তৎক্ষণাৎ কাস্টমস কর্মকর্তারা কনটেইনারটির খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ করে সেটিকে বন্দরের নির্দিষ্ট একটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন, যাতে সাধারণ মানুষ ও কর্মীদের সংস্পর্শে আসা এড়ানো যায়।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, কনটেইনারটিতে ছিল পুরোনো লোহার টুকরা বা স্ক্র্যাপ। প্রাথমিক পরীক্ষায় তাতে তিন ধরনের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ—থোরিয়াম-২৩২, রেডিয়াম-২২৬ এবং ইরিডিয়াম-১৯২—চিহ্নিত হয়েছে। বিকিরণের মাত্রা ঘণ্টায় প্রায় ১ মাইক্রোসিয়েভার্টস পাওয়া গেছে, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে খুব বেশি না হলেও দীর্ঘ সময় সংস্পর্শে থাকলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনকে বিষয়টি জানানো হয়। কমিশনের একটি বিশেষজ্ঞ দল শিগগিরই কনটেইনারটি সরেজমিনে পরীক্ষা করে বিকিরণের প্রকৃত মাত্রা ও ঝুঁকি নির্ধারণ করবে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, চিকিৎসা, শিল্প ও গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় উৎস ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সাধারণত এসব উপাদান বায়ুরোধী ও সুরক্ষিত পাত্রে সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু অসতর্কতা, যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা দুর্ঘটনার ফলে এগুলো বাইরে ছড়িয়ে পড়লে তা পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
বন্দর সচিব ওমর ফারুক জানান, “আমরা কমিশনকে অনুরোধ করেছি দ্রুত একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠাতে, যাতে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সুস্পষ্ট মতামত দিতে পারে। এই মতামতের ভিত্তিতেই কনটেইনারের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, এর আগেও চট্টগ্রাম বন্দরে একাধিকবার তেজস্ক্রিয় উপাদানসমৃদ্ধ কনটেইনার শনাক্ত হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ক্র্যাপ আমদানির ক্ষেত্রে উৎস দেশ থেকে প্রেরণের আগে যথাযথ রেডিয়েশন স্ক্যান নিশ্চিত না হওয়ায় এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। এতে শুধু শ্রমিকদেরই নয়, পুরো পরিবেশ ও সাধারণ জনগণের জন্যও দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।
What's Your Reaction?
 Like
        0
        Like
        0
     Dislike
        0
        Dislike
        0
     Love
        0
        Love
        0
     Funny
        0
        Funny
        0
     Angry
        0
        Angry
        0
     Sad
        0
        Sad
        0
     Wow
        0
        Wow
        0
     
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

 
                                                                                                                                                     
                                                                                                                                                     
                                                                                                                                                     
                                                                                                                                                     
                             
                             
                             
                             
                             
                             
                             
                             
                             
                            