ভুরুঙ্গামারীতে বন্যা ও পানিবন্দি মানুষের সহায়তায় উপজেলা প্রশাসনের সভা
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে বন্যা ও নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ৭৪০ পরিবারের সহায়তায় উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ত্রাণ বিতরণ, পশুখাদ্য সরবরাহ, রাস্তাঘাট মেরামত ও নদীভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
 
                                    কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে সাম্প্রতিক বন্যা ও নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তা ও পুনর্বাসন কার্যক্রম নিয়ে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দ্বীপ জন মিত্র।
সভায় অংশ নেন উপজেলার ১০ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সবুজ কুমার গুপ্ত, পুলিশ প্রশাসনের এসআই মিতু, কৃষি ও মৎস্য কর্মকর্তাসহ উপজেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির উপজেলা প্রধান সমন্বয়ক মাহফুজুল ইসলাম কিরণ।
সভায় জানানো হয়, গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে দুধকুমার, ফুলকুমারসহ স্থানীয় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করেছে। এতে বহু বাড়িঘর ডুবে গেছে এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় শহরের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, গবাদি পশুর নিরাপদ আশ্রয়ের সংকট দেখা দিয়েছে এবং কৃষিজমি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপজেলার ১০ ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নের ১৩টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শিলখুড়ীর ২টি, তিলাইয়ের ৩টি, পাইকেরছড়ার ১টি, আন্ধারিঝাড়ের ১টি, বলদিয়ার ১টি, চর ভুরুঙ্গামারীর ৩টি এবং বঙ্গ সোনাহাটের ২টি গ্রাম অন্তর্ভুক্ত। মোট ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ৭৪০, যার মধ্যে নদীভাঙনে ৪টি এবং পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে ৭৩৬টি পরিবার।
ত্রাণ সহায়তার অংশ হিসেবে উপজেলা প্রশাসনের কাছে বর্তমানে ৩১৫টি শুকনো খাবারের প্যাকেট মজুদ আছে, প্রতিটির মূল্য ১,৮০০ থেকে ১,৯০০ টাকা। এসব প্যাকেটে রয়েছে ১০ কেজি চাল, ১ কেজি করে চিনি, ডাল, তেল ও লবণ, পাশাপাশি ১০০ গ্রাম করে হলুদ, মরিচ ও ধনিয়া গুঁড়া। শিশুদের জন্য ৩০ হাজার টাকার বাজেটে বিশেষ খাদ্য সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে অলিম্পিক বিস্কুট, সুজি, চিনি, মশুর ডাল ও নুডুলস অন্তর্ভুক্ত। গবাদি পশুর জন্য ৩০ বস্তা পশুখাদ্য সংরক্ষিত রয়েছে।
বন্যা মোকাবিলায় উপজেলার ৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যেখানে ৯,৪০০ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য ২৪টি নৌযান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সভায় বক্তারা দ্রুত ত্রাণ বিতরণ, পর্যাপ্ত পশুখাদ্য সরবরাহ, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট ও বাঁধ মেরামত এবং নদীভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার দ্বীপ জন মিত্র স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে অনুরোধ করেন।
What's Your Reaction?
 Like
        0
        Like
        0
     Dislike
        0
        Dislike
        0
     Love
        0
        Love
        0
     Funny
        0
        Funny
        0
     Angry
        0
        Angry
        0
     Sad
        0
        Sad
        0
     Wow
        0
        Wow
        0
     
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

 
                                                                                                                                                     
                                                                                                                                                     
                                                                                                                                                     
                                                                                                                                                     
                             
                             
                             
                             
                             
                             
                             
                             
                             
                            