বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে মাইলস্টোন শিক্ষার্থীর মায়ের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী জাইরার মা লামিয়া আক্তার সোনিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। এই দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
গত ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী আসমাউল হোসনা জাইরার মা লামিয়া আক্তার সোনিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই, ২০২৫) বিকেলে সাভারের বিরুলিয়ার বাগ্নীবাড়ী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানের পক্ষে এই শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ সময় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি ‘বীর উত্তম এ কে খন্দকার’র উইং কমান্ডার আব্দুল বাসেদের নেতৃত্বে একটি ইউনিট লামিয়ার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে সম্মান জানায়।
উইং কমান্ডার আব্দুল বাসেদ বলেন, "আমি বিমানবাহিনী প্রধানের পক্ষ থেকে মরহুমা লামিয়া আক্তার সোনিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। ২১ জুলাইয়ের মর্মান্তিক যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় কোমলমতি শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষিকা, স্কুল স্টাফ এবং পাইলটসহ অনেকে শাহাদাত বরণ করেছেন। আমরা অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত।" তিনি আরও যোগ করেন, "এরকম ভয়াবহ দুর্ঘটনা বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ইতিহাসে এর আগে কখনও ঘটেনি। তবে দুর্ঘটনা কখনও নিয়ন্ত্রণাধীন নয়—দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। এই ঘটনার প্রতিটি কারণ অনুসন্ধানে উচ্চ পর্যায়ের একাধিক তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।"
উইং কমান্ডার আব্দুল বাসেদ জোর দিয়ে বলেন, "বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি বার্তা দিতে চাই—আমরা কেবল বাহিনীর লোক নই, আমরা দেশের মানুষ। দেশের স্বার্থেই আমরা কাজ করি। এই দুর্ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের জন্য আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা, সেবা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে সর্বদা প্রস্তুত ও বদ্ধপরিকর।"
তিনি আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের মানসিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে কাউন্সেলিং টিম, মেডিকেল টিম এবং ২৪ ঘণ্টা চালু জরুরি সাপোর্ট সেল গঠন করা হয়েছে। এই সেল থেকে যেকোনো সময় প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণ করা যাবে।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় নিহত লামিয়ার পরিবার এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর স্কুল ভবনে আগুন ধরে যায়। ওইদিন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে আসমাউল হোসনা জাইরাকে আনতে স্কুলে গিয়েছিলেন মা লামিয়া আক্তার সোনিয়া। দুর্ঘটনার সময় জাইরা নিরাপদে থাকলেও সোনিয়া নিখোঁজ ছিলেন। পরবর্তীতে ২৪ জুলাই ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তার লাশ শনাক্ত হয় এবং সেদিন রাতেই সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের বাগ্নীবাড়ী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
What's Your Reaction?
Like
0
Dislike
0
Love
0
Funny
0
Angry
0
Sad
0
Wow
0